বাংলাদেশের এক তরুণ মস্তই মিয়া নিজের ভালোবাসার অমোচনীয় ছাপ রেখে দিলেন বুকের উপর। ভালোবেসে ছুরির আঁচরে বুকের মাংস কেটে খোদাই করে লিখে ফেললেন — "ইকবাল"। আর এই ইকবাল এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত। প্রেম, দূরত্ব আর সমাজের চোখ রাঙানিকে হার মানিয়ে ভালোবাসার এক উগ্র বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন এই যুগল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মস্তই মিয়া (২৪) দীর্ঘদিন ধরেই ইকবালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। যদিও এই সম্পর্ক ছিল গোপন, কারণ সমাজ এখনো সমকামী সম্পর্ককে সহজভাবে নিতে শেখেনি। কিন্তু ভালোবাসার দায়ভার নিতে পিছপা হননি মস্তই। ইকবাল যখন বিদেশে পাড়ি জমান, তখন থেকেই তাদের দূরত্বের মাঝে ভালোবাসা আরও গভীর হয়।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মস্তই মিয়ার একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায় তিনি ব্যথা সহ্য করে নিজের বুকের ওপর ছুরি দিয়ে খোদাই করছেন ‘ইকবাল’ নামটি। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বুক, কিন্তু তার মুখে স্পষ্ট দৃঢ়তা — "ভালোবাসি, সবার সামনে প্রমাণ করে দেবো।"
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, ভালোবাসার এমন প্রকাশ নিঃসন্দেহে সাহসিকতা, আবার কেউ সমালোচনা করছেন — “এভাবে শরীর নষ্ট করে কিছু প্রমাণ হয় না।”
ইকবালের দিক থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে মস্তই মিয়া জানিয়েছেন, "ইকবাল আমায় ছাড়বে না। ও আমায় কথা দিয়েছে, আমরা একসঙ্গে থাকবো। সমাজ মানুক আর না মানুক, আমি আমার ভালোবাসার পেছনে জীবন দিতেও রাজি।"
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মস্তই মিয়ার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়ার পরামর্শ এসেছে। ইতিমধ্যেই কিছু মানবাধিকার সংগঠনও বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।
এই যুগলের প্রেম হয়তো সামাজিকভাবে এখনো গ্রহণযোগ্য নয়, কিন্তু তাদের অটুট ভালোবাসা আবারও স্মরণ করিয়ে দিল — ভালোবাসা কোনো সীমার মধ্যে আটকে থাকে না। আর সাহসিকতার সঙ্গে যদি কেউ নিজের ভালোবাসাকে সামনে আনে, তবে তা সমাজকে প্রশ্ন করতেই বাধ্য করে।
শেষ কথা:
ভালোবাসা যেমন আবেগ, তেমনি দায়িত্বও। মস্তই মিয়ার এই ঘটনা নিঃসন্দেহে হৃদয়স্পর্শী, কিন্তু শরীরের উপর সহিংসতা কখনোই হতে পারে না ভালোবাসার প্রমাণ। বরং সমাজ ও পরিবারকে নিয়ে গিয়ে, ভালোবাসাকে সম্মানজনকভাবে প্রতিষ্ঠিত করাই হওয়া উচিত আগামী দিনের পথ।